বাংলার বিখ্যাত মহারাজা শশীকান্ত আচার্য্যের পরিবার বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ এর আমলে প্রথম জমিদারী লাভ করে এবং তারা মুক্তাগাছাকে কেন্দ্র করে জমিদারী পরিচালনা করতে থাকে। ক্রমান্বয়ে আঠারশ শতকে মহারাজা মুক্তাগাছার বাহিরে বর্তমান টিচার্স ট্রেনিং কলেজের স্থলে রাজবাড়ী তৈরী করেন, যা স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন হিসেবে এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত এ রাজবাড়ীর প্রতিটি ইঞ্চিতে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য্য নাম দিয়েছিলেন শশী লজ। আর এ শশী লজ এবং তার সম্মুখস্থ গ্রীক সৌন্দয্যের দেবী ভেনাসের ভাস্কর্যটি আজ ময়মনসিংহ জেলার আইকনিক প্রতিনিধি হয়ে দাড়িয়েছে। ৯ (নয়) একর জমির উপর অনেক সবুজের সমারোহে অতীত ঐতিহ্য ধারণ করে শশী লজ মহাকালের সাক্ষীরূপে অম্লান হয়ে আছে। এর ছায়া ঘেরা হৃদয় স্পর্শ করা শীতল পরিবেশ, ভবনের সুদৃশ্য আকর্ষণীয় শিল্পমন্ডিত কারুকার্য কড়ই, অশোক, দেবদারু, কাঠগোপাল, অর্জুন, কর্পুরের বিশালত্ব ও প্রাচীনত্ব দর্শক ও পর্যটকদের নিয়ে যায় ইতিহাসের সেই সুবর্ণ সময়ে যখন এটি নির্মিত হয়েছিল। ভবনের পেছনে অবস্থিত “জলঘর” খ্যাত দোতলা পুকুর ঘাটলা। এই ভাস্করের পরিচয় জানা যায়নি। জানা যায়নি মার্বেল পাথরে আচ্ছাদিত বহুভূজাকৃতি দুই ঘাট বিশিষ্ট পেছনের পুকুরের ইতিহাস। তবে জানা গেছে রাজবাড়ীর প্রতিপত্তির সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুকুরের পশ্চিম পাশের সবচে প্রাচীন গাছ নাগলিঙ্গমের কথা, যার ফল সে সময়ে হাতির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শশী লজের স্থাপত্যকীর্তি যুগ যুগ ধরে আকর্ষণ করবে অসংখ্য পর্যটক ও সৌন্দর্য পিপাসুদের দৃষ্টিকে। প্রতিষ্ঠাতা শশীকান্তের স্মৃতিও উজ্জ্বল হয়ে থাকবে শশী লজের আঙ্গিনায় অনন্তকাল। মহারাজা সূর্যকান্ত তার দত্তক পুত্র শশীকান্তের নামে অনেক যত্নে নির্মাণ করেছিলেন এ প্রাসাদ। সিড়ি বেয়ে উঠলেই এক বিশেষ ধরণের সঙ্গীতের সুর বেজে উঠত। এ জমিদারীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ আচার্য্য। শশীকান্ত এই জমিদার পরিবারেরই শেষ উত্তরাধিকার।
অবস্থান : ময়মনসিংহ জেলা সদর
যোগাযোগ মাধ্যম : সড়ক পথ (ব্যক্তিগত যানবাহন/রিক্সা), ভাড়া আনুমানিক ২০/- (বিশ) টাকা
সময় : আনুমানিক ৩০ মিনিট।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস